তমাল কান্তি রায়, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
মেম্বারে বাড়িতে ফেন্সিডিলের আসর গ্লাসে ঢেলে দেন তারই পত্নী। ভারতীয় নিষিদ্ধ মাদক ফেন্সিডিলের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা ঠিক মতো করতে ভোটে দাঁড়িয়ে হয়েছেন জনপ্রতিনিধি। এখন কারো তোয়াক্কা না করে বাড়িতে বসিয়েছেন ফেন্সিডিলের মিনি বার। আবার সেই মিনি বারে ফেন্সিডিল গ্লাসে ঢেলে খদ্দেরদের সমান ভাগে ভাগ করে পরিবেশন করছেন তারই পত্নী।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য বাদশা মিয়ার বাড়িতেই ভারতীয় অবৈধ ফেন্সিডিলের বার। আবার সেই ‘বারে’ ফেন্সিডিল পরিবেশন করেন তারই স্ত্রী স্বপ্না বেগম। ইতিমধ্যে এরকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছরিয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝর।
স্থানীয়রা জানান, ভারতীয় সীমান্তবর্তী মালগাড়া গ্রাম চোরাচালানের অন্যতম রুট হিসেবে পরিচিত। এ এলাকা দিয়ে সব থেকে বেশি পাচার হচ্ছে ভারতীয় নিষিদ্ধ মাদক ফেন্সিডিল। সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে এ ব্যবসার সাথে জড়িত বাদশা মিয়া। ব্যবসার ঠিক রাখতে প্রশাসনিক সাপোর্ট এর জন্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে গোড়ল ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
জনপ্রতিনিধির লেবাসে চলছে মাদক ব্যবসা। খুচরা-পাইকারি দুই রকম ব্যবসাই রয়েছে তার। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বড় চালান পাচার করে সোজা বাদশার বাড়িতে পাঠান। সেখান থেকে সারা দেশে চলে যায় এসব মাদক। বাদশা মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় স্থানীয় প্রশাসনকেও হাত করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
খুচরা বিক্রিতে লাভ বেশি সে কারনে নিজ বাড়িতেই ফেন্সিডিলের মিনি বার খুলেছেন ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া। প্রতিদিন মাদকসেবীরা তার বাড়িতেই ভিড় জমান। হাতের কাছে নিরাপদ মাদক সেবনের ব্যবস্থা পেয়ে উঠতি স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কিশোর-তরুণ ছুটছে ওই ফেন্সিডিলের মিনি বারে। এভাবেই নষ্ট হচ্ছে এলাকার তরুণ সমাজ।
ইউপি সদস্য বাদশার স্ত্রী স্বপ্না বেগম নিজেই তার বাড়িতে ফেন্সিডিল চাহিদামত পরিবেশন করেন, গ্লাসে ঢেলে দেন সমান ভাগে। ইউপি সদস্যের বাড়িতে মাদক সেবনে প্রশাসনের ঝামেলা নেই- এটা ভেবে মাদকসেবীদের বর্তমান নিরাপদ বার ইউপি সদস্য বাদশা মিয়ার বাড়ি।
ভিডিওতে দেখা যায়, ইউপি সদস্য বাদশার স্ত্রী স্বপ্না বেগম টাকা নিয়ে নিজেই পাশের রুম থেকে ফেন্সিডিল এনে টেবিলের গ্লাসে পরিবেশন করছেন। পুরো বোতল নয়, বোতলের অর্ধেক বা এক চতুর্থাংশ ফেন্সিডিল সেবন করারও ব্যবস্থা রয়েছে। যত টাকা, ততটুকুই ফেন্সিডিল গ্লাসে পরিবেশন করা হয়।
তবে এসব বিষয় অস্বীকার করে গোড়ল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাদশা মিয়া বলেন, কার সঙ্গে কথা বলছ? আমাকে চিন? কথাবার্তা ভালো করে বলবা।
আপনার বাসায় ফিন্সিডিল বিক্রির বিষয়টি আপনি জানেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে জানি না বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। অনেককেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। তবে ইউপি সদস্যের বাসায় ফেন্সিডিল সেবনের সুব্যবস্থা রয়েছে এমন কোনো তথ্য আমাদের জানা নেই। এখন জানলাম, অবশ্যই দ্রুত অভিযান চালানো হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক
আশরাফুল আলম মানিক
নির্বাহী সম্পাদক
ফরিদুল ইসলাম শিপু
সম্পাদক ও প্রকাশক
মোঃ মোস্তাক আহমেদ
Leave a Reply