আব্দুল আউয়াল, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি:
বিলুপ্তির পথে বানারীপাড়ার ভাসমান ধান-চালের হাট। বরিশালের বানারীপাড়ার ঐতিহ্যবাহী ধান-চালের ব্যবসা বিলীন হওয়ার শেষ পর্যায়ে। ১৪ ই জুন মঙ্গলবার বানারীপাড়ার ঐতিহ্যবাহী ভাসমান ধান-চালের হাটে সকাল ৯ টায় গিয়ে দেখা যায় অল্প সংখ্যক কুটিয়াল কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। যা একসময় লোকমুখে শোনা যেতে সন্ধ্যা নদীতে এতো পরিমাণে ভাসমান ধান-চালের হাট বসতো যে মানুষ, নদীর এপার থেকে ওপারে এক নৌকা থেকে অন্য নৌকা, এ রকম করেই নদী পাড় হওয়া যেতো।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধান-চাল বেচা কেনায় ব্যস্ত থাকতেন ধান-চাল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বর্তমানে ধান চালের হাট বিলুপ্তির পথে ক্রেতা সংখ্যা কম উর্ধ্ব গতির কারণে। ধান-চালের ব্যবসার ঐতিহ্য হারিয়ে গেলেও স্বল্পসংখ্যক ব্যবসায়ী ধরে রাখতে চান এ ব্যাপসা। শতাধিক আড়তের মধ্যে এখন চালু রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি। এ কারণে সন্ধ্যা নদীতে ভাসমান ধান-চালের হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা নেই বললেই চলে।
এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না সেই ঐতিহ্যবাহী মলঙ্গা বালাম, কাজলা চাল। একসময় বানারী পাড়ার বালাম চাল সারা বাংলাদেশে খুব নাম ছিল। বরিশালের বানারীপাড়া বন্দরের উত্তর পাড়ে একসময় শতে শতে ধান-চালের আড়ৎ ছিল। কুটিয়াল, শ্রমিক, কয়ালে উত্তরপাড় বাজার বন্দর রাত-দিন জমজমাট থাকত। সংশ্লিষ্টদের পদভারে সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবার হাট এবং রোব ও বুধবার গালা বসত। বাকি তিন দিন মাল ওঠানো আর মোকামে পাঠানোর কাজ ব্যস্ত থাকতো ধান-চাল ব্যবসায়ীরা।
ধান-চালের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন।তারা এখন এ কাজ ছেড়ে অন্য কাজ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বানারীপাড়ার উত্তরপাড়ের কুটিয়াল মোস্তফা হাওলাদার বলেন, একসময় আমার বাপ দাদারা এ কাজ করতেন আমিও এ কাজ করি বাজারের এখন যে পরিস্থিতি কতদিন করতে পারব জানিনা।
বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা জানান, বানারীপাড়ার ধান-চালের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ব্যবসাকে ফিরিয়ে আনতে হলে দরকার প্রয়োজন সবার সহযোগিতা।তিনি আরো বলেন, ধান চালের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ধান গবেষণা কেন্দ্র বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। বানারীপাড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার রিপন কুমার সাহা বলেন, এবিষয়ে কুটিয়াল, আড়ৎদার ,ব্যাবসায়ীরা আমাদের কাছে আসলে পদক্ষেপ গ্রহণ করার চেষ্টা করব।
Leave a Reply